আসসালামু আলাইকুম
প্রিয় পুত্র জুলফিকার!
প্রথমেই তোমার জন্য ১টি নসিহাহ —
তুমি সব সময় মনে রাখতে হবে, তোমার জন্ম যেভাবে হয়েছে ঠিক একইভাবে একদিন মরাও যেতে হবে।
তবে এই মৃত্যু হতে হবে আল্লাহর রাহে।
লাখো কাফেরের শীর উচ্ছেদ করতে হবে তোমার নিজের হাতে।
এই জীবনের সফর হবে শুধু মাত্র আল্লাহর উদ্দেশ্যে যিনি তোমাকে সৃষ্টি করেছেন আমাদের কে উসীলা বানিয়ে।
যিনি তোমাকে সৃষ্টি করেছেন এবং তোমার জন্য জান্নাতে বাড়ি নির্মিত রেখেছেন সেই বাড়ি এখন তোমার সাজানোর সময়!
মনে রাখবে, তুমি এখন যেমনভাবে আল্লাহর আনুগত্য করবে তার থেকে হাজার গুণ বেশি আল্লাহ আখিরাতে তোমাকে দিবেন ইনশাআল্লাহ।
এবার একটু গল্প শুনো যেটা শুরুটা হয়েছিলো তোমাকে দিয়ে!
তোমার আগমনটা ছিলো এমন যে হঠাৎ বৃষ্টির মতো! না চাইতেই আল্লাহর রহমত বর্ষণ হয়েছিল আমাদের ঘরে।
তবে সত্যি এটাই যে আমি বা তোমার বাবা আমরা বাচ্চা নিয়ে চাইতাম না শুধু বয়স অল্প হওয়ার কারণে। এছাড়াও চার পাশের মানুষ প্রেগন্যান্সির কষ্ট আর প্রসবের ব্যথার কথা এমনভাবে উপস্থাপন করতো যে অনেক ভয় পেতাম, ভাবতাম আমি কখনো মা হতে পারবো না।
তাই বাচ্চা নিলেও আরো দেরিতে নেওয়ার সিদ্ধান্ত গ্রহণ করেছিলাম পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে তাল মিলিয়ে।
কিন্তু আমরা যতই প্ল্যান করি না কেন আল্লাহ তো আছেনই উনার পরিকল্পনা বাস্তবায়নের জন্য।
অতঃপর আমাদের সব ধরনের প্ল্যান আর সিদ্ধান্তকে উজাড় করে দিয়ে আল্লাহ তা’আলা রহমত স্বরূপ তোমাকে দিলো তোমার মায়ের গর্ভে!
আর তখন থেকেই তোমার বাবা-মা আর সাথে তোমার জীবনের কঠিনত্বের শুরুর যাত্রা, এই যাত্রা শুরু হয় প্রচুর ভয়াবহতার সাথে যেটা আজও কাটেনি আমাদের জীবন থেকে, তাই বলে ভরসাহীন হয়ে যাইনি আলহামদুলিল্লাহ। আল্লাহ তাআলা একদিন সব সহজ করে দিবেন ইনশাআল্লাহ।
কঠিনত্বটা শুরুতেই আসে তোমার নানাদের পরিবারের কাছ থেকে — সবার সাথে তোমার মা নিজের পর্দা নষ্ট করে অবাধে না মিশাতে, সমাজের সাথে তাল মিলিয়ে না চলাতে, সাথে তোমার বাবার তেমন টাকা-পয়সা ছিলো না যে আমরা ঠিকভাবে চলতে পারবো তাই তোমার নানা একটু টাকা দিতো মাঝে মাঝে, পরে এসব নিয়েই ঝামেলা হয়, শুরু করে তোমার বাবা আর আমার সম্পর্ক নিয়ে ওরা টানাটানি। শেষে এই পরিবারের সাথে বিচ্ছেদ ঘটে আমাদের।
1
আমরা প্রচুর কষ্ট পাই কিন্তু তারপরও আল্লাহর দিকে তাকিয়ে ছাড়তে হলো ওদেরকে কারণ ওদের সাথে থাকলে দ্বীনের উপর টিকে থাকা একদমই অসম্ভব।
তারপরও ঠুনকো একটা সম্পর্ক ছিলো কিন্তু ওইটাও তুমি গর্ভে থাকার ৯ মাসের সময় শেষ হয়ে গেছে শুধু তোমাকে গালি দিলো অপবিত্র বলে তাই।
তোমার দাদীর পরিবারও একই কাজ করে একই বিষয়গুলো নিয়েই এরা আরো কঠিনভাবে ঠকায়। যাই হোক তারপরও এদেরকে ছাড়তে চাইনি, ভেবেছিলাম এরা দ্বীনের বিষয়টা বুঝেনা, এদেরকে বুঝাই দেখি কিন্তু বুঝানোর পর আরো সব উল্টো গেলো সাথে ওইসব বিষয়ে বুঝাইতে গিয়ে তুমি জুলফিকার এর কথা জানতে পারে, আর প্রচুর ক্ষেপে যায় ওরা সবাই তোমার বাবা-মায়ের উপর সাথে তোমাকে আজে বাজে গালি দিতে থাকে তোমার নানীদের মতো। এরপর এদের সাথেও সম্পর্ক শেষ।
সব শেষে আমরা সব দিক থেকেই একা হয়েছি, তুমি কেন আসতেছো পৃথিবীতে? আমরা কেন সুযোগ দিলাম তোমাকে? কেন মেরে ফেলিনি/নষ্ট করিনি? এইসব নিয়ে অনেকের অনেক কথা শুনেছি। কিন্তু সব সহ্য করলেও তুমি জুলফিকার কে যারা গালি দিয়েছে এসব আর সহ্য করতে পারিনি।
এবার দুই পরিবার যা একটু সাহায্য করতো ঐটা শেষ!
ওদের সবার সাথে সম্পর্ক শেষ!
পরিবার/আপনজন হারানোর যন্ত্রণা!
সাথে তোমার মায়ের প্রেগন্যান্সির যন্ত্রণা!
খাবার-দাবারের কষ্ট!
তুমি গর্ভে আছো তোমার যেনো ক্ষতি না হয় সেই ভয়ে কোনো ওষুধ না খাওয়া!
সব ধরনের অসুস্থতার সম্মুখীন হওয়া!
সাথে এভাবে পাওয়া মানসিক যন্ত্রণা!
এর উপর আর্থিক অবস্থাও অনেক খারাপ!
সব মিলিয়ে আমরা একদম একা একটা রাস্তায় যাত্রা শুরু করলাম আমি আর তোমার বাবা একমাত্র আল্লাহর উপর ভরসা করে!
এই একা জীবনযুদ্ধে তোমার বাবা অক্লান্ত পরিশ্রম করে যান দিন-রাত! প্রায় সময় ঘুম-খাওয়া সব বাদ। নিজের সব সখ বিসর্জন দিয়ে তোমার আর তোমার মায়ের সুস্থতার জন্য, ভালো থাকার জন্য, যখন যেটুকু হয় ঐটুকুর মধ্যেই নিজের সর্বোচ্চটা বিলিয়ে দেন। আর এদিকে তোমার মা শত অসুস্থতার পরও তোমার ক্ষতি হবে বলে কখনো কোনো ওষুধ গ্রহণ করেনি।
2
অথচ অন্য সব মানুষের সাধারণ একটা নিয়ম হলো বাচ্চা পেটে আসলেই ডাক্তারের কাছে যাওয়া আর বস্তাবস্তা ওষুধ খাওয়া, অথচ এতে বাচ্চার ক্ষতি হয় আর জন্ম থেকেই একটা বাচ্চা হাসপাতালের রুগী হয়ে উঠে, এসব ওষুধ খেয়ে একটা বাচ্চার সুস্থ জীবনকে জেনে বুঝে নষ্ট করে দেওয়া হয়! আর তোমার মা এটা থেকে তোমাকে রক্ষা করার জন্য আল্লাহর নিকট হাজার রকম কাকুতি মিনতি আর ওষুধ খেলেন না নিজেই। সাথে অন্য অসুস্থতার জন্য চলমান চিকিৎসাও বন্ধ করে দেন তোমার ক্ষতি হবে এই ভয়ে।
পরিস্থিতি যাই হোক তোমার বাবা-মা দুজনেই আল্লাহর উপর পূর্ণ ভরসা রেখে সব সহ্য করে আর এটা ভরসা করে বসে যে তুমি বাসাতেই জন্মাবে যেখানে অন্য সব বাচ্চারা হাসপাতালে জন্মায় এবং আরো ভরসা করে যে, হাসপাতালে না গিয়ে কষ্ট করে বাসায় জন্ম দিতে পারলে তো পর্দাও নষ্ট হবে না। সিজার বা সাইড কাটানোর কথা তো ভুলেও ভাবা হয়নি কখনো। অথচ এখনকার অধিকাংশ মানুষ সহজেই সিজার করিয়ে নেয়। তোমার মা নীরবে সব রকম অসুস্থতার যন্ত্রণা সহ্য করে, তোমার বাবাও অনেক কষ্ট করে এবং দুজনেই আল্লাহর উপর এই ভরসায় অটুট থাকে যে, তুমি জন্মের আগে বা পরেই আর্থিক অবস্থা ঠিক হয়ে যাবে, হয়তো সুস্থও হয়ে যাবো। হাসপাতালে অন্তত তোমাকে জন্ম দিতে হবে না আর পর্দাও নষ্ট হবে না।
কিন্তু শেষ মেষ এই ভরসার ওপরও পরীক্ষা!
এই ৯ মাসে এত যন্ত্রণা সহ্য করার পর আমরা ভেবেছিলাম সব ঠিক হয়ে যাবে। কিন্তু না, কিছুই ঠিক হয়নি। বরং পরিস্থিতি আরো কঠিন হয়ে যায়।
এই কষ্ট শুরু হয় দীর্ঘ ৯ মাসের যন্ত্রণা সহ্য করার পর ঠিক ৯ মাস ১ দিন থেকে মানে তুমি জন্মের ১১ দিন আগে থেকে লেবার পেইন শুরু হয়ে যায়। যেটা স্বাভাবিকভাবে অন্যদের শুরু হয় ২-৩ দিন আগে সর্বোচ্চ।
এরপর এই ১১ দিন তীব্র যন্ত্রণা সহ্য করার পরও যখন তোমার মুখ দেখতে পারেনি তোমার বাবা-মা। তখন ব্যথার যন্ত্রণা নিয়ে ১২ দিনের ভোরে বাধ্য হয়ে হাসপাতালে যেতে হয়। তাও এই ভয়েই যে তুমি আর জীবিত নেই! কারণ তোমার মাথা প্রায় দেখাই যাচ্ছিলো, ধরা যাচ্ছিলো মাথাটা! আর ২ ইঞ্চি বাহিরে বের হলেই তুমি আমাদের বুকে থাকতে, কিন্তু বের হওয়া তো দূরে থাক উল্টো শুধু ব্যাথাই বাড়তে থাকে। তখন তোমার বাবা-মা ভাবে যে হয়তো তোমার ক্ষতি হয়ে গেছে বা যাবে অথবা তোমার রূহ দুনিয়া ছেড়ে চলে গেছে।
তখন হাসপাতালে যাওয়া তো হয়। সাথে পর্দাও নষ্ট হয় আবার তোমাকে বের করা হয় সাইড কেটে। আর আর্থিক অবস্থাও আগের থেকেও জটিল, তোমার বাবার ইনকামের ১ টাকাও নেই। আর, তখন তোমার মায়ের শখের কিছু জিনিস বিক্রি করে দেওয়া হয় আর ঐগুলো দিয়ে সমস্ত খরচ সামলানো হয়। সংক্ষেপে বললে যা ভরসা করা হয়েছে আল্লাহর উপর তার একদম বিপরীতটা ঘটে! আল্লাহর ওপর ভরসা করেও এভাবে পরীক্ষার মুখোমুখি হওয়া! জানো এটা কতোটা কঠিন!? এটা ভাষায় বুঝানো সম্ভব না! আমরা এরপর প্রায় ভেঙ্গে পড়ি কিন্তু আবারো শক্ত হয়ে নিজেদের ঠিক রাখি। মানতে হবে, আল্লাহর পরীক্ষা অনেক কঠিন!
3
এবার শুনো তোমার জন্মের কিছু সময়ের গল্প,
এই ১১ দিন যন্ত্রণা সহ্য করেও,অসুস্থতার যন্ত্রণায় পুরোপুরি ঘুম হারাম হয়ে গেছে তোমার মায়ের। সাথে তোমার বাবাও রাত দিন জেগে দেখা শুনা করতে হচ্ছে। এই ১১ দিনে অবস্থা এমন হয়েছে যে তোমার বাবা দাঁড়িয়েও ঘুমে পড়ে যেতে চায়! এরপরও যখন তোমাকে দেখতে পাচ্ছিলাম না তখন হাসপাতালে যাওয়া হলো। যাওয়ার পর পরই সাইড কেটে তোমাকে বের করা হলো। তোমাকে দেখার সাথে সাথে মনে হলো এ যেনো আমার হাতের মুঠোয় গোটা একটা চাঁদ। যেই চাঁদ আমার পৃথিবী আলোকিত করে আসলো এত যুদ্ধের পর আলহামদুলিল্লাহ! জীবিত আর সম্পূর্ন সুস্থভাবে তোমাকে পেয়ে কি পরিমাণ আনন্দ পেয়েছিল তোমার মা, এটা ভাষায় প্রকাশ করার মতো না। যেখানে তোমার সাথে জন্মানো আরও বাচ্চাদের কে ওষুধ আর ইনজেকশন দিয়ে দেওয়া হচ্ছে। ১ টা বাচ্চাও এই বিষয় গুলো থেকে মাহরুম নেই শুধু মাত্র তুমি জুলফিকার ছাড়া! তোমার ১ ফোঁটা পরিমাণ কিছু গ্রহণ করতে হয়নি আলহামদুলিল্লাহ। এটা বলা যায় একমাত্র আল্লাহর বিশেষ সাহায্য। হয়তো তিনি পরীক্ষার করেন কিন্তু রহম’ও তো করেন। আমার সন্তানের সাথে আমার সন্তানের সুস্থতাও আমাকে নেয়ামত স্বরুপ দিয়েছেন তিনি আলহামদুলিল্লাহ। যাই হোক, তোমাকে সুস্থ দেখে মনে হলো এতটা কষ্ট করে ঠকিনি হয়তো আমরা। তোমার জন্মের সাথে সাথে তোমার মায়ের চাওয়া মতো শীতল বাতাস বইলো আর অনেক বৃষ্টি হলো আলহামদুলিল্লাহ। কিন্তু তোমার মা এই বৃষ্টির শব্দ ছাড়া আর কিছুই উপভোগ করতে পারেনি। কারণ ওই মুহূর্তে তোমাকে নিয়ে হাসপাতালের বেডে শুয়ে আছেন তোমার মা। আর তার কিছুক্ষন পরে তোমাকে তোমার বাবার কাছে দিয়ে দেওয়া হলো। তখন বাইরে আরো জোরে বৃষ্ট্রি শুরু হলো। লেবার রুমের বাইরে তোমার বাবা তোমাকে কোলে নিয়ে দাঁড়িয়ে আছে। আর তোমার মায়ের জন্য অপেক্ষা করছে।
তখন তোমার মায়ের তোমার বাবার সাথে দেখা করার তৃব্য আকাঙ্ক্ষা, সাইড কাটার যন্ত্রণা, সাথে প্রসবের যন্ত্রণা তোমার মাকে প্রায় পাগল করে তোলে! যাই হোক, সব শেষে ওখান থেকে বের হয়ে তোমাকে নিয়ে বাসায় চলে আসি আমরা। সব ক্লান্তি শেষে রাতে ঘুমাতে আসার পর আকাশের চাঁদ দেখে মনে হচ্ছিলো আমার জুলফিকার এর কাছে হেরে যাচ্ছে ওই চাঁদের সৌন্দর্য…..!
এরপর তোমার মায়ের শরীর আগে থেকে কিছুটা ঠিক হতে শুরু করে ধীরে ধীরে। কিন্তু তারপরও প্রচুর যন্ত্রণা তো আছেই। কিন্তু তোমার মুখের দিকে তাকালে নিমিষেই মনে হতো যেনো সব কষ্টের অবসান এখানেই সমাপ্তি, আলহামদুলিল্লাহ। এরপর এভাবেই কয়েকটা দিন কাটিয়ে ঘনিয়ে আসে তোমার আকীকা!
আজ সপ্তম দিনে তোমার আকীকা।
আর, আজ এই দিনে তোমার জানের বিনিময়ে ২ টি পশুর জন কোরবান এবং তুমি জুলফিকার আল্লাহর রাহে কোরবান।
আকিকার পর থেকে তুমি একমাত্র আল্লাহর গোলাম হয়ে থাকবে ইনশাআল্লাহ।
4
প্রিয় পুত্র “জুলফিকার” আমাদের একমাত্র চাঁদ তুমি,,
তোমাকে মনে রাখতে হবে যে, তোমার নামে কিসের অর্থ বহন করে (আলী রা: এর তলোয়ারের আরেক রূপ তুমি হবে ইনশাআল্লাহ) এবং বুঝতে হবে তোমার জন্মের উদ্দেশ্য ও লক্ষ্য। তোমার জীবন বাকিদের থেকে আলাদা! তোমার রুহ আসার আগেই যখন তুমি একটা রক্তের ফোঁটা ছিলে তখন থেকেই তোমার জীবন বাকিদের থেকে আলাদা এবং কঠিন! তোমার জীবন শুরুই হয়েছে কঠিনত্ব আর বিচ্ছেদ দিয়ে! সমাজের আর পরিবারের তুচ্ছ তাচ্ছিল্যতা দিয়ে! তাই কখনো কোনো আপনজনের বিচ্ছেদ কিংবা দুনিয়ার কোনো তুচ্ছ বিষয়ে ভেঙ্গে পরোনা।
বাবা-মা হিসেবে শুধু এটুকু আবদার থাকবে যে, হাশরের ময়দানে যেনো আমরা তোমাকে নিয়ে গর্ভ করতে পারি। আল্লাহর সামনে দাড়িয়ে যেনো বলতে পারি এটা আমাদের “জুলফিকার” আপনি যাকে আমাদের বুকে দিয়েছিলেন! যার বাবা-মা হওয়ার সৌভাগ্য হয়েছিল আমাদের! ব্যাস এইটুকু হলেই আমরা সফল বাবা-মা হতে পারবো ইনশাআল্লাহ। অন্য বাবা-মায়েদের মতো টাকা পয়সা সম্পদ বা আমাদের দেখা শুনা কিছুই করতে হবে না। শুধু আমাদের কে সাহায্য করো একটু সৌভাগ্যবানদের কাতারে যেনো শামিল হতে পারি আমরা।
– তোমার বাবা-মা
